তিন পথিকৃৎ শিল্পী : মুর্তজা বশীর , রশিদ চৌধুরী , দেবদাস চক্রবর্তী 

0
634

একটি শিল্পকর্ম মানে শিল্পীর জীবনযাত্রা, তার সৃষ্টিশীলতার জগৎ, সর্বোপরি একজন মানুষ হিসেবে তার চিন্তা ও কর্মের প্রতিচ্ছায়া। পথিকৃৎ শিল্পীদের শিল্পকর্মে তারই প্রতিফলন দেখতে পাই। Forerunners: Rashid Choudhury, Murtaja Baseer, Debdas chakraborty প্রদর্শনীতে একই সাথে বাংলাদেশের শিল্পচর্চার অনেকগুলো বিষয় উঠে এসেছে। একটি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বুঝতে হলে স্থান, কাল, পাত্র বিশ্লেষণ যেমন জরুরি ঠিক তেমনি শিল্পকলা চর্চায় মনন ও মানসিকতার বিকাশের পথ পরিক্রমা জানার ক্ষেত্রেও রয়েছে এই তিনটি বিষয়ের পারস্পরিক অবদান। কিউরেটর শিল্পী ঢালী আল মামুন এই প্রদর্শনীতে শিল্প শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আধুনিকতায় তাঁদের অবদান বা আধুনিকতার যে পরিবর্তন বা পশ্চিমা আধুনিকতার চর্চা জানা সত্ত্বেও, কীভাবে তাদের স্থানিক আধুনিকতা তৈরি হয়, সেই প্রক্রিয়া তুলে ধরেছেন। 

একটি প্রদর্শনীর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয়কে ভেবে মূল পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে মূল ধারণা, নিবেদন প্রক্রিয়া, আত্ম ও সামাজিক দায়বদ্ধতা। বর্তমান সময়ের শিল্প শিক্ষার্থী ও শিল্পানুরাগীদেরকে পথিকৃৎ শিল্পীদের সাথে বৃহদাংশের পরিচিত করানো ইত্যাদি।

প্রদর্শনীতে চিত্রকর্ম ও ট্যাপেস্ট্রির পাশাপাশি আর্কাইভাল ম্যাটেরিয়াল হিসেবে ছিল তাঁদের প্রকাশিত বইপত্র, ডায়েরি, কবিতা, চিঠিপত্র, সরাচিত্র, কাঠের ছাপচিত্র, ধাতব প্লেট, ও টেরাকোটার আলোকচিত্র। ছিল মুর্তজা বশীরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝামা ইটে করা অক্ষয়বট নামক ম্যুরালচিত্র ও রশিদ চৌধুরীর ময়মনসিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির দেওয়ালে করা ষড়ঋতু নামক ফ্রেস্কো ম্যুরাল চিত্রটির দৃশ্যরেকর্ড। তাছাড়াও ছিল বিশালাকৃতির টেরাকোটার লেসার কাট করা একটি প্রতিলিপি ও রশিদ চৌধুরীর শ্রেণিকক্ষে দেওয়া বক্তৃতার অডিও রেকর্ড। একটি প্রকাশিত সাক্ষাৎকারকে শ্রুতি রূপায়ণের মাধ্যমেও উপস্থাপন করা হয়েছে। 

চট্টগ্রামে প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পচর্চার শুরু রশিদ চৌধুরীর হাত ধরে। পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে ছিলেন মুর্তজা বশীর ও দেবদাস চক্রবর্তী। তিনজনই ঢাকা ও চট্টগ্রামে শিল্পচর্চায় বিশেষ অবদান রাখেন। তাদের শিল্পমাধ্যম, কর্মপ্রক্রিয়া ও উপস্থাপনে রয়েছে ভিন্নতা। দেশে ও বিদেশে রয়েছে তাদের শিল্পচর্চার ক্ষেত্র। ফলে তাদের চিন্তাচর্চায় বহুবিধ সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটেছে। যা আসলে আধুনিকতার একটি বড় বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনগুলো তাদেরকে বিশেষভাবে আলোড়িত করেছে ও তাদের মননের জায়গা তৈরি করতে সাহায্য করেছে। পঞ্চাশ থেকে আশির দশক পর্যন্ত পুরো পৃথিবী জুড়েই ছিল সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মার্কিন বিট জেনারেশন, অ্যাংরি ইয়ং ম্যান মুভমেন্ট, কলকাতার হাংরি জেনারেশন, বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, পশ্চিমা আধুনিক দর্শন ভাবনা ও তার পাশাপাশি এই অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতিরও প্রভাব রয়েছে তাদের শিল্পচর্চায় এবং স্থানিক আধুনিকতার কাঠামো তৈরিতে। 

মুর্তজা বশীর ( ১৯৩২- ২০২০)  পারিবারিকভাবেই তাঁর বেড়ে ওঠা শিল্প ও সাহিত্যিক পরিমণ্ডলের মধ্যে। ১৯৪৮ সালে চারুকলায় শিক্ষা গ্রহণের শুরু বামপন্থী রাজনীতির কারণে হলেও তাঁর পরবর্তী যাত্রা ছিল ভীষণ পরিশ্রম ও আত্মতৃপ্তির জায়গা থেকে। প্রথমদিকে  তাঁর আগ্রহ ক্ল্যাসিকাল শিল্পের প্রতি থাকলেও তিনি আগ্রহী ছিলেন বাইজেন্টাইন ও মেক্সিকান শিল্পের প্রতি।  তিনি ফিগারেটিভ কাজের প্রতিও ঝুঁকে পড়েন ও একই সময়ে কালীঘাটের চিত্রের প্রতিও তার আগ্রহ দেখা যায়। ষাট-সত্তরের দশকে তিনি অনেক প্রদর্শনী করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, অনেক কিছুই করবার আছে কিন্তু সময় বেশি নেই। তাই সর্বক্ষণ এক অস্থিরতা তাঁর মধ্যে দেখা যেত। আইসিসিআর  ফেলোশিপ নিয়ে তিনি কলকাতার মন্দির টেরাকোটা শিল্পের উপর প্রায় তিনশো গ্রাম মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান করেন যার ছবি ছিল এই প্রদর্শনীতে। 

মুর্তজা বশীর
In The memory of Enesal Mansion, May 96
ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ২০০৩

স্প্যানিশ কবি লোরকার কবিতা নিয়েও ছবি এঁকেছেন মুর্তজা বশীর। সুরিয়ালিজমের অনেক কবি-সাহিত্যিক ও চিত্রশিল্পী দ্বারা তিনি প্রভাবিত ছিলেন। এবং রশিদ চৌধুরীও প্রভাবিত ছিলেন পল এলুয়ার ডেসনোস ও জ্যাক প্রেভে দ্বারা। এই তিনজনই ফ্রেন্স ও  সুরিয়ালিস্ট মুভমেন্ট-এর সাথে যুক্ত ছিলেন। মুর্তজা বশীর ও রশিদ চৌধুরী দুজনেরই আগ্রহের জায়গা ছিল লোকজ ঐতিহ্যে।

তাঁর সকল সিরিজের মধ্যে দেয়াল ও এপিটাফ-এর রয়েছে আলাদা তাৎপর্য। বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের ভাষায়  ..a reality behind reality. মুর্তজা বশীরের মর্গ  সিরিজের ১৪টি শিল্পকর্ম অন্য সকল শিল্পকর্ম থেকে ভিন্ন। তবে মর্গ নিয়ে তাঁর মতো করে বাংলাদেশে আর কেউ কাজ করেছে এমন জানা নেই। আমেরিকান একজন আলোকচিত্রশিল্পী নাম আন্দ্রে সেরানো, তাঁর মর্গ নামে ফটোগ্রাফির একটি সিরিজ আছে। বিষয় একই হলেও প্রকাশের মাধ্যম ও প্রক্রিয়া একেবারেই ভিন্ন।  

রশিদ চৌধুরী
Replica of Universal,
টেরাকোটা, ১৯৮৪

রশিদ চৌধুরী (১৯৩২ -১৯৮৬ ) জয়নুল আবেদিন-এর সহায়তায় চারুকলায় ভর্তি হন। বিলুপ্ত প্রায় জমিদার বাড়ির বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তাঁর সৃষ্টিশীল মনোজগৎকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি কলকাতার আশুতোষ মিউজিয়ামে দেশীয় শিল্পশিক্ষার প্রশিক্ষণ নেন । পরবর্তীতে স্পেন ও ফ্রান্সে ভাস্কর্য, ট্যাপেস্ট্রি ও ফ্রেস্কো বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। নিজের উৎস সহজিয়ার পরিমণ্ডল ও তার সাথে বিশ্ব পরিমণ্ডলের সাংস্কৃতিক আন্দোলনগুলির যে মেলবন্ধনের প্রয়াস তিনি করেছিলেন তা আধুনিক চিন্তার বাহক। একদিকে বাংলার লোকজ সংস্কৃতি অন্যদিকে ফ্রান্সের সুরিয়াল কবি পল এলুয়ার, ডেসনোস, প্রেভে ও শিল্পী শাগাল এর প্রতি যে ভালো লাগা তার মধ্যে যেন একটা সেতু তৈরি করার চেষ্টায় নিবদ্ধ ছিলেন। তাঁর এই সন্ধিৎসু মন লুসরাত-এর হাত ধরেই যেন খুঁজে পেল দেশীয় উপকরণে তৈরি ট্যাপেস্ট্রি শিল্প। ফ্রান্সেই ছিল সারা বিশ্বের সবচাইতে নিখুঁত ট্যাপেস্ট্রি তৈরির পুরাতন কারখানা গবলিন ট্যাপেস্ট্রি। যদিও রশিদ চৌধুরীর সেখানে বিচরণ ছিল কিনা তার কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। ট্যাপেস্ট্রি, আমাদের বয়ন শিল্প যা আমাদের ঐতিহ্যর সাথে সম্পর্কিত  এবং যার ভেতর স্থানিক স্বতন্ত্র উপস্থাপন রয়েছে । একেই বেছে নিলেন  তাঁর শিল্পভাষা হিসেবে। বিভিন্ন মাধ্যমেই তিনি কাজ করেছেন তবে ট্যাপেস্ট্রি তৈরির পূর্বে গোয়াশ-এ তিনি লেআউট তৈরি করতেন। তার উপস্থাপনায় তিনি বারবার ফিরেছেন লোকশিল্পের দিকে, ফিরেছেন পাহাড়পুর, ময়নামতি, ও রাধাকৃষ্ণের কাছে। ফিরেছেন প্রকৃতির কাছে যে প্রকৃতির প্রেম তাকে চঞ্চল করে। 

দেবদাস চক্রবর্তী  ১৯৩৩ সালে শরীয়তপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন শিল্পী দেবদাস চক্রবর্তী। দেশভাগ সময়কালে তাঁর পরিবার কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়। সেখানেই ১৯৪৮ সালে ভর্তি হন কলকাতা আর্ট কলেজে ও জড়িয়ে পড়েন বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গে খাদ্যাভাবে যখন মানুষ বিক্ষোভে নেমে পড়ে এমনই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল আমন্ত্রিত হন কলকাতা আর্ট কলেজের বার্ষিক প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে।  শিক্ষার্থীরা তার আগমনের বিরোধিতা করার ফলে তিনি ফিরে যান। এই ঘটনা পরিক্রমায় আর্ট কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন রেবা হোর, সোমনাথ হোর, রমেন চক্রবর্তী, বিজন চৌধুরী, দেবদাস চক্রবর্তী ও আরো কয়েকজন। পরবর্তীতে তিনিও জয়নুল আবেদিনের সহায়তায় ১৯৫০ সালে ভর্তি হন ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট-এ। এই স্থানান্তর পরে স্থায়িত্বে রূপান্তরিত হয়। ঢাকা আর্ট কলেজের পরিবেশ, বন্ধু মহল, শিক্ষক তাদের সামাজিক ও প্রগতিশীল মনোভাব শিল্পী দেবদাসকে তৈরি করে দেয় মননশীল চর্চার পরিবেশ। ছাত্রাবস্থায় সওগাত প্রেসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পাকিস্তানী সাহিত্য সংসদ, তার লেখক ও সংগঠকের যারা চালিকাশক্তি ছিলেন তাঁদের সঙ্গেই ছিল তাঁর বিচরণ। ঊনিশ-বিশ শতকে শিল্প ও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার শিল্প আন্দোলন এবং ভ্যানগঘ ও তুলুজ লুত্রেকের জীবনীমূলক উপন্যাস, অন্যদের মতন দেবদাসকেও আন্দোলিত করে। ছাত্রজীবন শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে যোগদান ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালে মুজিব নগরে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদপ্তরে শিল্পী কামরুল হাসানের অধীনে ডিজাইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন। ১৯৭৬ সালে পোল্যান্ড সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি চলে যান ওয়ারশ-তে ছাপচিত্র বিষয়ে অধ্যায়নের জন্য। সে-সময়ে তার ছাত্র জীবনের কাজের ধারা কালি ও কলমের পুনরাবৃত্তি নতুন মাত্রা যোগ করে। ওয়ারশ-তে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আর্ট ওয়ার্কশপে চিত্রকলায় পুরস্কার লাভ করেন। তার শিল্পচর্চার সময়কালে  তিনি কালি ও কলম , জল রং, তেল রং, মিশ্র মাধ্যম গোয়াশ, ছাপচিত্র, পোস্টার, প্যাস্টেল ইত্যাদি মাধ্যমে কাজ করেন। 

প্রকৃতি, শ্রমজীবী মানুষ, শহর, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ স্থান কালের প্রশ্নবোধক ভাবনা তাঁকে শিল্প রচনায় উন্মুখ রেখেছে। বিবিধ বিষয়ের মধ্যে বৃষ্টি, টাইম এন্ড স্পেস এবং টাইম এন্ড মুভমেন্ট সিরিজগুলো উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৯ তে স্ত্রী বিয়োগের কারণে শিক্ষা সম্পন্ন না করেই ফিরে  আসেন ও চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে যান ঢাকায়। অসুস্থতার কারণে প্রায় এক যুগ শিল্পচর্চা থেকে দূরে থাকেন ।  ২০০৮ সালে তিনি পরলোকগমন করেন। পরিচিত ও বন্ধুমহলে ‘দেবু দা’ নামের এই শিল্পী ছিলেন প্রচন্ড বন্ধুবাৎসল্যপূর্ণ ও আড্ডাপ্রিয় মানুষ। কথিত আছে, সর্বদা বন্ধুমহল নিয়ে গল্পে জমে থাকতে পছন্দ করতেন তিনি। ছিলেন পরোপকারী। অনেক শিল্পীদের শিল্পকর্ম বিক্রি করার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন তিনি। তার মধ্যে রয়েছেন মুর্তজা বশীর ও রশিদ চৌধুরীও। তিনি শিল্পীকর্মের পৃষ্টপোষক তৈরির একজন প্রকৃত মধ্যস্থতাকারী ছিলেন, যা সেই সময়ের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

দেবদাস চক্রবর্তী
মাটির সরাচিত্র

দেবদাস চক্রবর্তী
অফসেট লিথোগ্রাফি, ১৯৭১

দেবদাস চক্রবর্তী
Rain
ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ১৯৯১

ছাত্র শিক্ষকের সম্পর্ক ও সম্মান প্রদর্শন আমাদের সংস্কৃতির অংশ। তারই নিগূঢ় উপলদ্ধি থেকে প্রদর্শনী পরিকল্পনার সূত্রপাত। তাঁদের শিল্পচর্চার শুরু থেকে শেষ অব্দি সামগ্রিক যাত্রাটাকে এখানে তুলে আনার চেষ্টা ছিল।  এর ভেতর দিয়ে বোঝার চেষ্টা আমাদের আধুনিকতার ধরণ ও কারণকে।

শেষ করবো রশিদ চৌধুরীর একটি বাক্য দিয়ে : ‘বিমূর্ত শিল্পের সামনে বিমূর্ত মন  নিয়ে দাঁড়াতে হবে। তখন আপনি অনুভূতির জগতে চলে গেছেন। বাস্তব জগতে নেই। ওই মানসিকতা নিয়ে দাঁড়ালে নিশ্চই কিছু খুঁজে পাবেন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে